সিলেটের কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে, মাধবপুর লেক এবং চা বাগান যেন প্রকৃতির এক টুকরো স্বর্গ। সবুজের সমারোহ আর নীল জলের মিতালীতে এখানে সময় থমকে যায়। গত মাসে ঘুরতে গিয়ে এই জায়গাটি আমার হৃদয়ে গেঁথে গেছে। আজ আমার ব্লগে মাধবপুরের সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি।
লেকটা কেমন?
মাধবপুর লেক প্রকৃতির হাতে আঁকা এক নিখুঁত ছবির মতো। পাহাড়ের কোলে এই প্রাকৃতিক হ্রদটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি শান্ত। লেকের পানি নীলাভ, চারদিকে চা-বাগান আর গাছপালা ঘেরা। কোথাও কোথাও পানিতে ফুটে থাকে শাপলা ফুল যেন প্রকৃতির নিজস্ব সাজ।
একটা মজার ব্যাপার হলো লেকের পাড় ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে মনে হচ্ছিল আমরা কোনো গল্পের ভেতরে হাঁটছি। এমন পরিবেশে হঠাৎ হঠাৎ পাখির ডাক, দূরে পাহাড়ে ভেসে আসা মেঘ, আর সঙ্গে বন্ধুদের হাসাহাসি সব মিলিয়ে এক অন্যরকম ফিল।
চা-বাগানের মধ্যে দিয়ে হাঁটা
লেকের আশপাশে ছড়িয়ে আছে মাধবপুর চা-বাগান। আমরা একটু ঘুরে নিলাম বাগানের ভেতর। চা-পাতা তুলছেন এমন চা-শ্রমিকদের সাথে হালকা কথা বললাম, ছবি তুললাম (তাদের অনুমতি নিয়ে অবশ্যই!)।
বাগানের মাঝখানে একটা ছোট দোকানে গরম চায়ের কাপ আহা, সেই স্বাদ! পাহাড়ি বাতাসে এমন চা যেন জাদুর মতো কাজ করে।



কেন যাবেন মাধবপুর?
মাধবপুর শুধু দৃশ্যের জন্য নয়, মনের শান্তির জন্যও। শহরের কোলাহল থেকে পালিয়ে প্রকৃতির কাছে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চাইলে এটি আদর্শ জায়গা। সঙ্গে বন্ধু বা পরিবার থাকলে আনন্দ দ্বিগুণ। তবে, পরিবেশ রক্ষায় সচেতন থাকুন প্লাস্টিক ফেলবেন না, প্রকৃতিকে যেমন পেয়েছেন তেমনই রেখে আসুন।
মাধবপুর আমাকে শিখিয়েছে, প্রকৃতির সঙ্গে একটু সময় কাটালে জীবনের ছোট ছোট কষ্ট ভুলে যাওয়া যায়।
দরকারি কিছু তথ্য:
- লোকেশন: কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার (শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ২০ কিমি)
- ভ্রমণের উপযুক্ত সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ (শীতকালে দৃশ্য বেশি পরিষ্কার)
- প্রবেশমূল্য: ২০-৩০ টাকা মাত্র
- চা-বাগান ঘোরার সময় শালীনতা বজায় রাখা জরুরি
শেষ কথা
মাধবপুর লেক কেবল একটা ঘুরে দেখার জায়গা নয়, এটা যেন প্রকৃতির কোলে কিছু সময় নিজের সাথে কাটানোর সুযোগ। পাহাড়, লেক আর চা-বাগানের মিলনে এখানে যে শান্তি, তা শহরের কোনো কফিশপে মিলবে না!